৮০ ফুট গর্তের নীচে ১০৪ ঘন্টা সাপ এবং ব্যাঙের সঙ্গে কাটিয়ে অবশেষে উদ্ধার ১১ বছরের রাহুল
গত শুক্রবার বছর এগারোর রাহুল সাহু ৮০ ফুট কুয়োর ভিতরে পড়ে গিয়েছিল। তাঁকে উদ্ধার করতে দিন রাত এক করে কাজ চালিয়ে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনা এবং পুলিশ। অবশেষে ১০৪ ঘণ্টার চেষ্টায়, ৫০০ কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে বাচ্চাটিকে কুয়ো থেকে তুলে আনা সম্ভব হয়েছে।ছেলেটিকে উদ্ধার করতে দিনরাত এক করে কাজ চালিয়ে গেছে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী, সেনা এবং পুলিশ।
উদ্ধারের প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিট এবং ঘণ্টা যেমন রুদ্ধশ্বাস ছিল, কূপের মধ্যে ১০৪ ঘণ্টা কাটানোও ততটা বিপজ্জনক ছিল। এই ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিসগড়ের জঞ্জগির চম্পা জেলায়।১১ বছরের ওই কিশোরের নাম রাহুল সাহু। গত ১০ জুন গ্রামের বাড়িতে খেলা করছিল সে। হঠাৎই বাড়ির পিছন দিকে খুঁড়ে রাখা কুয়োর কাছাকাছি চলে যায় সে। তারপর কখন যে কুয়োতে পড়ে যায় তা নাকি নিজেও বুঝতে পারেনি রাহুল। ছেলেটি ভাল করে কথা বলতে পারে না এবং কানেও ঠিকমত শুনতে পারে না।
৮০ ফুট গভীর কুয়োর ৬০ ফুটে গিয়ে আটকে ছিল ছেলেটি। তাকে উদ্ধার করতে পুলিশ সেনাবাহিনী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সমবেত প্রচেষ্টা চালায়। এমনকি রাহুলকে উদ্ধার করতে তিন দিনের মাথায় রোবোটও নামানো হয় কুয়োতে। ৫০০-র বেশি কর্মী রাহুলকে কুয়ো থেকে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন পাঁচ দিন ধরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ। অবশেষে ১৫ ফুট দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরি করে ১০৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার গভীর রাতে উদ্ধার করা হয় তাকে।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন কুয়োর মধ্যে একটি সাপ ছিল, আর একটি ব্যাঙও ছিল। এত নীচে অক্সিজেনের অভাবে যেমন রাহুলের প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা ছিল, তেমনই সাপের কামড়ে মৃত্যুও হতে পারত তার। কোনও বাচ্চা কুয়োতে পড়ে যাওয়ার পর তাকে তুলে আনার ঘটনা নতুন নয়, তবে রাহুলের ঘটনা নজির গড়েছে। এত দীর্ঘ উদ্ধার কাজ আগে কখনও হয়নি।উদ্ধারের আগে প্রতিটা মিনিট ঘন্টা চ্যালেঞ্জিং ছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশের কাছেও।
৮০ ফুটের গর্তের নীচে ১০৪ ঘন্টা সাপ ও ব্যাঙের সাথে কি করে কাটাল রাহুল। এই ঘটনা যেই শুনছেন, সেই শিউরে উঠছেন। সরু জায়গা ঘুটঘুটে অন্ধকারে কী করে অত দীর্ঘ সময় কুয়োর ভিতকে কাটাল ওই বালকটি।তার উদ্ধারে যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে পুরো ছত্তিশগড়। চার দিন ধরে তার জন্য প্রার্থনা করেছে ছত্তিশগড়ের মানুষ।
রাহুলকে উদ্ধারের পর মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল টুইট করে বলেছেন, আমাদের ছেলে দারুণ সাহসী। ১০৪ ঘণ্টা তার সঙ্গী ছিল একটি সাপ এবং একটি ব্যাঙ। আজ গোটা ছত্তিশগড় খুশি।কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার ওই সরু জায়গায় থেকেও তিনটি প্রাণীর কেউই কারো ক্ষতি করেনি। এই ঘটনাকে অনেকেই ‘চমৎকার’ বলেও দাবি করেছেন।